We will notify if any of your ordered book is out of print or price revised due to reprint or new edition.
Anish Deb
In Stock
SCIENCE FICTION
ANANDA
Hard Cover
9788172150273
Bengali
304
বিশ্বসাহিত্যে কল্পবিজ্ঞানের সূচনা যাঁর হাতে, সাহিত্যের ইতিহাসে তাঁর নাম হয়তো থেকে যেত অন্য এক ক্ষুদ্র পরিচয়ে। নিতান্তই এক কবিপত্নী রূপে এক লাইনের উল্লেখ পেতেন তিনি। কিন্তু কবি পি. বি. শেলির স্ত্রী, শুধু এই পরিচয়ে আজ আর আবদ্ধ নয় নেরি শেলির নাম। যে-লেখা তিনি শুরু করেছিলেন টিন-এজার হিসেবে, যে-লেখা প্রকাশিত হয়েছে তাঁর একুশ বছরে পা দেবার আগে, সেই ‘ফ্র্যাঙ্কেস্টাইন: অর দ্য মডার্ন প্রমিথিউস’ নামের উপন্যাসটি রাতারাতিই দৃষ্টি কেড়ে নেয় সাহিত্যরসিক মহলের, মেরি শেলিকে করে পরিচিত তথা প্রতিষ্ঠিত। বিচ্ছিন্নভাবে কল্পবিজ্ঞানের আভাস রয়েছে এমন রচনা এর আগেও হয়তো প্রকাশিত হয়েছে, তবু সামগ্রিকতার বিচারে নেরি শেলির ‘ফ্র্যাঙ্কেস্টাইন’ উপন্যাসের মধ্য দিয়েই বিশ্বসাহিত্যে কল্পবিজ্ঞান-সাহিত্যের জয়যাত্রার শুরু—এ-কথা আজ বলা যেতে পারে। নেরি শেলির উপন্যাসটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ১৮১৮ সালে। সেই মুহূর্তে অবশ্য ‘সায়েন্স ফিকশন’ শব্দবন্ধের আবিষ্কার হয়নি। এই শব্দবন্ধের উদ্ভাবক সমালোচক উইলিয়ান উইলসন। ১৮৫১ সালে প্রকাশিত তাঁর একটি গ্রন্থে এই শব্দযুগলের প্রথম ব্যবহার। আর, জুল ভের্ন এবং এইচ. জি. ওয়েলস-এর মতো তুমুল প্রতিভাবান দুই লেখক যে-মুহূর্তে সাহিত্যে তাঁদের স্থায়ী আসন করে নিলেন, সন্দেহ নেই, সেই মুহূর্ত থেকেই সাহিত্যের এক নতুন শাখা রূপে অপ্রতিরোধ্য স্থান করে নিল ‘সায়েন্স ফিকশন’–এই শব্দবন্ধ। ‘সায়েন্স ফিকশন’-এর আদলে তৈরি ‘কল্পবিজ্ঞান’ শব্দটি এখন বাংলা সাহিত্যে সুপরিচিত। শব্দটি যত চেনা, এর সংজ্ঞার্থ অবশ্য ততটা সুনির্দিষ্ট নয় এখনও। কল্পনা ও বিজ্ঞান এই দুই শব্দ মিশেই যে তৈরি হয়েছে কল্পবিজ্ঞান, আঁচ করতে অসুবিধে হয় না। কিন্তু কতটুকু কল্পনা আর কতখানি বিজ্ঞান থাকবে সার্থক কল্পবিজ্ঞানে, কোন্ বিজ্ঞান হবে কল্পবিজ্ঞানের উপাদান—অলৌকিক কাণ্ডকারখানার কল্পিত বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ, নাকি অনাবিষ্কৃত তবু সম্ভাবনাময় বিজ্ঞানকল্পনা—তার কোনও চূড়ান্ত মীমাংসায় পৌঁছনোর সময় হয়নি এখনও। এর অন্যতন একটা কারণ তত্ত্বগতভাবে হয়তো এই যে, কোনও সৎ সাহিত্যকেই পুরোপুরি সংজ্ঞার্থের গন্ডিতে ধরে রাখা যায় না। চলমান সাহিত্যের ধর্মই হল নিজের পরিধিকে বাড়িয়ে চলা, চেনা ছকটিকে ভুলিয়ে দেওয়া। কোনও সংকলনের নাম যদি হয় ‘সেরা কল্পবিজ্ঞান’ এবং সেই সংগ্রহকে করে তুলতে হয় সার্থকনানা, একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির মাপকাঠিতেই সেক্ষেত্রে করতে হয় কাহিনীর গ্রহণ-বর্জন। এই সংকলনের সম্পাদক অনীশ দেব নিজে যে শুধু কল্পবিজ্ঞানের লেখক তা নয়, পাঠক হিসেবেও পৃথিবীর তাবৎ কল্পবিজ্ঞান-সাহিত্যের সঙ্গে গভীর পরিচয় তাঁর। সর্বোপরি, বিজ্ঞানের পঠনপাঠন তাঁর জীবিকা। তাই, কোন্ বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই সংকলনের গল্প-নির্বাচন তাঁর, প্রথনেই সেকথা স্পষ্ট করে তুলেছেন। কল্পবিজ্ঞান-চর্চার উৎস থেকে আধুনিক কাল পর্যন্ত অগ্রগতির এক সর্বাত্মক পরিচয় তুলে ধরে এই সংকলনের মূল্যবান ভূমিকায় তিনি জানিয়েছেন—‘কল্পবিজ্ঞান কাহিনীতে বিজ্ঞানের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ বিশেষ নিয়ন্ত্রণী ভূমিকা থাকবে। থাকবে অজানা সম্ভাব্য জগতের কথা, প্রাণীর কথা, আর আগামী দিনের কথা’। এই বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই সংকলিত এই গ্রন্থের সাতাশটি গল্প। যার কোথাও শোনা যাবে অলৌকিক গুহার দৈববাণী, কোথাও দেখা যাবে ক্ষণে-ক্ষণে চেহারা বদলানো এক আশ্চর্জন্তকে। সময়ের গাড়ি কখনও বেড়াতে নিয়ে যাবে ভবিষ্যতে, কখনও রোবট দাবি করবে মানুষের সমান অধিকার। কখনও চোখে পড়বে কাচভুক্ এক অদ্ভুত পোকা, কখনও মনে হবে, কলকাতা ঢেকে গেছে পাঁচ ফুট গভীর তুমারে। বিজ্ঞানের বেড়াজালে বন্দী এ যেন এক আধুনিক আরব্যরজনী। শুধু ‘চিচিং ফাঁক’ বলার অপেক্ষা, একে- একে খুলে যাবে সাতাশটি দরজা। সাতাশজন লেখকের সাতাশ রকম ভাবে সাজানো অন্দরমহল। রোমাঞ্চকর, মায়াময় এক-একটি অদ্ভুত জগৎ। সেই জগতে আশ্চর্য ভ্রমণের আমন্ত্রণ নিয়ে এল এই ‘সেরা কল্পবিজ্ঞান’।
Customer Reviews
No reviews available.
Comment